“সাকরাইন” পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীনতম বার্ষিক উৎসব গুলোর মধ্যে একটি। সাকরাইন বলতেই আমরা জানি উৎসব মুখোর পরিবেশে ঘুড়ি উড়ানো।
সাকরাইন উৎসব, মূলত পৌষসংক্রান্তি, ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত, বাংলাদেশে শীত মৌসুমের বাৎসরিক উদযাপন, ঘুড়ি উড়িয়ে পালন করা হয়। সংস্কৃত শব্দ ‘সংক্রান্তি’ ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পৌষ ও মাঘ মাসের সন্ধিক্ষণে, পৌষ মাসের শেষদিন সারা ভারতবর্ষে সংক্রান্তি হিসাবে উদযাপিত হয়। তবে পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তি বা সাকরাইন সার্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবের রূপ নিয়েছে।
বর্তমানে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী শহরের আকাশ। এক কথায় বলা যায় সাকরাইন হচ্ছে এক ধরণের ঘুড়ি উৎসব। বাংলা ক্যালেন্ডারের নবম মাস পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজিত হয় যা গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের হিসেবে জানুয়ারী মাসের ১৪ অথবা ১৫ তারিখে পড়ে। বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।
বাংলাদেশের প্রাচীন উৎসব সমূহের মধ্যে পুরান ঢাকার সাকরাইন উৎসব অন্যতম। যদিও এটা সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী পালিত হয় না কিন্তু খুব জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশি সংস্কৃতি। এটাকে ঐক্য এবং বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
পুরো সপ্তাহ জুড়ে পুরনো ঢাকার অলিতে-গলিতে আনন্দ মুখোর পরিবেশে চলে সাকরাইন এর প্রস্তুতি, চলে সুতোয় মাঞ্জা দেয়ার ধুম। এই দিন বাহারি রঙের ঘুড়িতে আকাশ হয়ে উঠে ঘুড়িময়। ছোট বড় সবার অংশগ্রহণে প্রতিটি বাড়ির ছাদ হয়ে উঠে উৎসব মুখর, আর বেলা বারার সাথে সাথে বাড়তে থাকে উৎসবের জৌলুস।
এই দিনে বেলা বারার সাথে সাথে বাড়তে থাকে গান বাজনা ফানুস আর আতশবাজির খেলা। ঢাকার বাকি এলাকায় এই উৎসবের তেমন সাড়া না পাওয়া গেলেও লক্ষ্মীবাজার, তাঁতিবাজার, শাঁখারিবাজার, ধুপখোলা, সদরঘাট, লালবাগ, বংশাল, সুত্রাপুর এবং আশেপাশের এলাকার চেহারা থাকে অন্যরকম। পুরোই যেন ঈদ।
সাকরাইন-এর আয়োজন শুরু হয় জানুয়ারী মাসের শুরু থেকেই। রঙিন কাগজ কেটে ঝালর বানিয়ে কিংবা পাখি, ফুল আর নানা ধরণের আকৃতি বানিয়ে পুরানো বাড়িগুলোর ছাঁদ, জানলা ও বারান্দায় ঝুলিয়ে দেয় স্থানীয়রা। মুখরোচক খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য। পটকা আর আতশবাজির গগনবিদারী শব্দের সঙ্গে চলতে থাকে অত্যুৎসাহীদের ফায়ার_ব্রিদিং। মুখে কেরোসিন নিয়ে হাতে ধরা কাঠি আর মশালের উপর ফুকে দিলেই আগুন এর হল্কা বেড়িয়ে আসে। আপনি যদি পুরান ঢাকার স্থানীয় অধিবাসী না হয়ে থাকেন, আপনাকে এই চমৎকার উৎসব উপভোগ করার জন্য অবশ্যই ‘নেমন্তন্ন’ পেতে হবে স্থানীয় কোন বন্ধুর কাছ থেকে।
সেই বন্ধুর কাজটিই এবার হাতে নিয়েছে ফেসবুক গ্রুপ Travel Tracker। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও এই আনন্দ উপভোগ করার সৌভাগ্য অনেক ঢাকাবাসীর হয়না, তাই এই উৎসবের আনন্দ আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য Travel Tracker ফ্যামিলি আয়োজন করতে যাচ্ছে দিন ব্যাপি সাকরাইন উৎসব। অনেক কিছু হবে এ উৎসবে এবং অনেক মজা তো হবেই। অনাবিল আনন্দের সাথে দেখতে পারা যাবে অনেক নতুন কিছু।
প্রোগ্রাম_আইটেনারিঃ
১। সকাল ১১ টার পর থেকেই শুরু হয়ে যাবে ঘুড়ি উৎসব, চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
২। দুপুর ২-৫ টা চলবে দুপুরের খাবার পরিবেশন।
৩। বিকেল বেলা শুরু হবে পিঠা, ফুচকা, হাওয়াই মিঠাই, আগুন পান, চা ইত্যাদি স্নাক্স এর পালা। যে যার মত নিয়ে খেতে থাকবেন।
৪। সন্ধ্যার শুরু থেকেই আতশবাজি আরম্ভ হবে এবং এর সাথেই চারদিক আলোকিত হবে ‘ফায়ার ব্রিদিং’ এর দাপটে। চলবে রাত পর্যন্ত।
৫। নানাবিধ এসব আকর্ষণের মধ্যে আচমকা আগমন ঘটবে আমাদের মূল আকর্ষণ ‘লাইট শো’ এর।
৬। ডি.জে. এর মিউজিক এর তালে আন্দলিত ও ফানুস উড়ানোর মোহে মেতে থাকা সকল উদযাপনকারীদের অংশগ্রহনে প্রোগ্রাম চলতে থাকবে রাত ৯ টা পর্যন্ত।
যা_যা_থাকছে (ক্রমান্বয়ে):
১. #খাবারঃ
• দুপুরের খাবার
• পিঠা
• ফুচকা
• হাওয়াই মিঠাই
• আগুন পান
• চা ইত্যাদি।
২, #অ্যাক্টিভিটিঃ
• রঙ-বেরঙের ঘুরি ওড়ানো
• আগুনের খেলা/ ফায়ার ব্রিদিং
• ফানুস উড়ানো
• আতসবাজি (fireworks)
• লাইট শো
• ডি.জে.
৩, #খরচ:
• ১৫০০ টাকা (জনপ্রতি)।
• ১২০০ টাকা (আন্ডার গ্র্যড স্টুডেন্ট) (সাথে আই ডি প্রুফ নিয়ে আসতে হবে)
আয়োজন সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট:
ফেসবুক পেজ: www.facebook.com/travel7trackers
ফেসবুক গ্রুপ: Travel Tracker